ওয়াসফিয়া নাজরীন বাংলাদেশের নাম পৌঁছে দিলো চায়না-পাকিস্তান বর্ডারে ভয়ঙ্কর পর্বত শৃঙ্গ কে-২ তে। বাংলাদেশের পতাকা তিনি কখনও উড়িয়েছেন মাউন্ট এভারেস্টে, কখনও আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো আবার কখনও সাউথ আমেরিকার একঙ্কাগুয়া তে। বাংলাদেশের সোনার মেয়ে ওয়াসফিয়া নাজরীনকে জানাই রমনীয়র পক্ষ থেকে অভিনন্দন।
ওয়াসফিয়া নাজরীন প্রথম বাংলাদেশী যিনি গত ২২ জুলাই, ২০২২ ইং পাকিস্তানের কারাকোরাম রাজ্যের কে-২ ( ২৮,২৫০ ফিট) পর্বত জয় করেন। এই পর্বতটি এতোই দুর্গম যে বিগত ১৯৫৪ সাল থেকে যতো জন এই পর্বত জয় করতে গিয়েছেন, তাদের মাঝে প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন এই পর্বতের ভয়াবহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে প্রান হারায়।

যাত্রার শুরুর দিকে ওয়াসফিয়া বলেন,
“K2 Base Camp ট্র্যাকের প্রথম অংশে আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে প্রচণ্ড উন্মত্ত নদীর পাশাপাশি সবচেয়ে বিশ্বাসঘাতক রাস্তাগুলির মধ্যে একটি দিয়ে যাত্রা করা প্রয়োজন। যখন উপর থেকে পাথর আছড়ে পড়ছে, ভূমিধস হচ্ছে বা কোন নোটিশ ছাড়াই রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই সমস্ত কিছুর মধ্যে দিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য অনেক দক্ষতার প্রয়োজন, এবং এখানে আমাদের চ্যাম্প আহমেদ আলি ভাই, গিলগিটবালতিস্তানের শিগার উপত্যকার ইউনো গ্রামের, যিনি আমাদেরকে দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ অস্পৃশ্য এবং অক্ষতভাবে। এরা হলেন কারাকোরামের অজ্ঞাত নায়ক। যেমনটি আমি আগেও অনেকবার বলেছি, K2 এর মতো পাহাড়ে আরোহণ করতে মোট দলগত প্রচেষ্টা লাগে। আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ সকল লোকের কাছে, বিশেষ করে নামহীন পোর্টারদের কাছে যারা আমাদের জিনিসপত্র বেসক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং যারা শক্তিশালী চোগোরিতে আমাদের প্রবেশদ্বারকে এত মসৃণ করে তুলেছিলেন।”
(সংগৃহীত)
২০১১ সালে বাংলাদেশের ৪০ বছর পুর্তি উপলক্ষে তিনি চ্যালেঞ্জ নেন যে তিনি ৭টি মহাদেশের ৭টি সরবোচ্চ পর্বোত শৃঙ্গে আরোহন করবেন! বাংলাদেশে এই প্রথম কেউ এরকম চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।

৭টি মহাদেশের ৭টি সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ হলো-
কিলিমাঞ্জারো, আফ্রিকা (৫৮৯২ মিটার/১৯৪৪৪ ফিট)
মাউন্ট এলব্রাস, ইউরোপ (৫৬৪২ মিটার/১৮৬১৯ ফিট)
একোংকাগুয়া, সাউথ আমেরিকা- (৬৯৬২ মিটার/ ২২৯৭৫ ফিট)
ভিনসন মেসিফ, এন্টার্টিকা-( ৪৮৯২ মিটার/১৬১৪৪ ফিট)
এভারেস্ট, এশিয়া-( ৮৮৯০ মিটার/ ২৯০৩৫ ফিট)
ডেনালি, নর্থ এমেরিকা-( ৬১৯৪ মিটার/ ২০৪৪০ফিট)
কার্স্টেঞ্জ পিরামিড, ওসেনিয়া- ( ৪৮৮৪ মিটার/ ১৬১১৭ ফিট)
ওয়াসফিয়া নাজরীন শুধু বাংলাদেশী নারী হিসেবে নয় একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশ কে রিপ্রেসেন্ট করেছেন। যা কেউ পারেনি তাই তিনি করে দেখিয়েছেন। তার আগামীর পথ চলা আরও সুগম হোক আর সফলতাপুর্ন হোক এই প্রত্যাশা আমাদের রমণীয় পরিবারের পক্ষ থেকে।